সপ্তাহান্তে যারা বেড়িয়ে পড়েন একটু নিরিবিলি নিস্তব্ধ পাহাড়ি জনপদে দুটোদিন কাটাতে তারা একবার আসতে পারেন বাংরিপোসি। ওড়িশার ময়ুরভঞ্জ জেলার বারিপদা অঞ্চলের বুড়িবালাম নদীর তীরে বাংরিপোসির অবস্থান।বুড়িবালাম নদীর ব্রীজ থেকে সূর্যোদয় বা সূর্যাস্ত দেখা একটা অন্যরকম অনুভূতি।
ওড়িশার রানী বাংরিপোসিকে ঘিরে আছে বিদ্যাবিহার, পাথরকুসী, অর্ধেশ্বর, বুধবোধী ছাড়াও নাম না জানা অনেক পাহাড় চূড়া যেগুলো সকাল সকাল খাওয়া দাওয়া সেরে অনায়াসে ট্রেকিং করে আসা যায়। বেলাতে বুরিবালাম নদীতে স্নান সেরে খাওয়া দাওয়া করে বিশ্রাম নিয়ে বিকেলে হেঁটে জঙ্গল - গ্রামে ঘুরে আসা এক অনন্য অভিজ্ঞতা । সন্ধ্যায় দূরে জঙ্গল থেকে ভেসে আসা মাদলের তান আর পাখিদের ঘরে ফেরার গান আপনাকে পৌছে দেবে এক নতুন দেশে।
শাল, মহুয়া, শিমুল,পলাশের পাশাপাশিএখানে রয়েছে আম, জাম, কাঁঠাল সহ নানান গাছ-গাছালি। এক এক জায়গায় আম বাগান দেখে মালদা-মুর্শিদাবাদের কথা মনে পড়বেই । মাঝে মাঝে পথের দুধারে চোখে পড়বে আদিবাসিদের ঘরবাড়ি যার নিকানো উঠোন আর সুদৃশ্য আলপনায়
আঁকা চিত্রিত দেওয়াল এককথায় অনবদ্য । পথের ধারেই দেখতে পাবেন হাড়িয়া নিয়ে বসে থাকা কচিকাঁচা সহ নারী-পুরুষ। সবই এখানে খোলামেলা। তাদের সাথে আলাপচারিতায় ভাষাগত বৈপরীত্যই প্রধান বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়।
পথনির্দেশ :
কলকাতা থেকে ধৌলি এক্সপ্রেস এ বালেশ্বর নেমে ওখান থেকেই বাংরিপোসি লোকাল ধরে বাংরিপোসি আসা যায়.
ধর্মতলা (প্রেস ক্লাবের নিকট )থেকে রাতে বাসে বারিপদা হয়েও বাংরিপোসি আসা যায়।
সড়কপথে কোলকাতা থেকে NH৬ ধরে বাংরিপোসি প্রায় ২৩০ কিলোমিটার।
আর কি দেখবেন
বাংরিপোসি থেকে ঘুরে আস্তে পরেন - ঘাঁটির কাছে কনকদূর্গা বা বনবিবি মন্দির যেটা খুবই জাগ্রত ।এছাড়া নাদাম বাঁধ , তালবন , চোরাবন , ব্রহ্মকুন্ড । এই জায়গা গুলো ১০ - ২০ কিমির মধ্যে । আর একটু দূরে সুলাইপত বাঁধ ৪৭ কিমি । করওনজিয়া ৮৬ কিমি । কিচকেশ্বরী মন্দির ৯০ কিমি । ভীমকুন্ড ১২৫ কিমি ।
বাংরিপোসি থেকে (জোশীপুর ৬০ কিমি ও বারিপদা ৩৭ কিমি ) হয়ে সিমলিপল ন্যাশনাল পার্কের পার্মিট নিয়ে সারা দিনের জন্য ঘুরে আসা যায়(জুনের মাঝামাঝি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বন্ধ থাকে ) ।
বারিপদা থেকে যাওয়া যায় দেবকুন্ড , নারায়ণ মন্দির , জগন্নাথ মন্দির , কুলিয়ানা গ্রামের ডোকরা শিল্প ।
হোটেল /হোমস্টে /রিসর্ট :
হোটেল বাংরিপোসি (যোগাযোগ নম্বর : 9831309512)
খইরি রিসর্ট (যোগাযোগ নম্বর : 9437877730 )
শিমলিপাল রিসর্ট (যোগাযোগ নম্বর : 9437612747)
ট্যুর প্ল্যান:
বাংরিপোসি পৌঁছে
প্রথম দিন : ১) ব্রাহ্মণ কুন্ড ২) ঠাকুরানী হিল ৩) বুড়িবালাম নদী ৪) মা দুয়ারসিনি মন্দির ৫) বাঁকবল ড্যাম ৬) সুলাইপাত ড্যাম ৭) বাদামপাহাড়
দ্বিতীয় দিন : ১) শঙ্কর মারা হ্রদ (ড্যাম) ২) বালিডিহা ড্যাম ৩) সিমলিপাল ফরেস্টের লুলুং নদী (পিঠাবাটা গেট দিয়ে) ৪) সীতাকুন্ড জলপ্রপাত ৫) কুলিয়ানা গ্রামে ডোকরা শিল্প
★ আর একদিন অতিরিক্ত যোগ করে সিমলিপাল ফরেস্ট ঘুরে নিতে পারেন । তবে সময় কম থাকলে বা ইচ্ছে করলে সিমলিপাল ফরেস্ট ট্রিপ পরে আলাদাভাবেই করা ভালো ।
No comments