অফিসের কাজে তিন দিনের জন্য গিয়েছিলাম কোচবিহার। ট্রেনেই যেতে যেতে খসড়াটা করে ফেললাম চার সহকর্মী। কাজের ফাঁকে এক দিন বের করে কোথায় ঘুরে আসা যায়। যা দেখলাম বক্সা জয়ন্তী রাজাভাতখাওয়া সাথে যদি বোনাস হিসেবে জলদাপাড়া অভয়ারণ্যে একটা সাফারি ম্যানেজ করা যায় মন্দ হয় না। নিউ কোচবিহার স্টেশনে নামলাম যখন ভোর 3টে। VIP ওয়েটিং রুম এখানে খোলা থাকে না। Enquiry অফিসে বললে খুলে দেয় AC টিকেট থাকলে। একটু সময় কাটিয়ে ফ্রেশ হয়ে রওনা দিলাম অতিথিনিবাসের উদ্দেশ্যে। তিন দিন ওখানেই থাকার ব্যবস্থা। রুমের নাম কালজানি। সব রুম গুলোই উত্তরবঙ্গের এক একটি নদীর প্রতীকী। ছিমছাম পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন বেশ ভালোই লাগলো।
পুরো কোচবিহার শহর জুড়েই এক রাজকীয় ছোঁয়া। বেশির ভাগ প্রশাসনিক ভবনগুলিই পুরণোদিনে রাজবাড়ীর দপ্তর ছিল বলে মনে হয়। কাজ সেরে সন্ধ্যে বেলাই এসে একটা গাড়ি বুক করে নিলাম পরেই দিনের জন্য। কোচবিহার থেকে সোজা জলদাপাড়া ওখানে 3টের সাফারির টিকিট বুক করে বেরিয়ে যাবো বক্সা টাইগার রিজার্ভ। দরদাম করে ঘুর পথে একটু হেঁটে ফিরে এলাম কোচবিহার রাজবাড়ীর সামনে দিয়ে।
সকালে বেরিয়ে পড়লাম ডুয়ার্সের উদ্যেশে। কোচবিহারের রাস্তা ঘাট প্রশংসার দাবি রাখে। পিচকালো রাস্তার ওপর দিয়ে আমাদের swift dzire ছুটে চলেছে এক শৃঙ্গ্ গন্ডারের প্রাকৃতিক বাসস্থানের দিকে। জলদাপাড়া অভয়ারণ্য পূর্ব হিমালয়ের পাদদেশে 216 বর্গ কিলোমিটার অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে। এরই সংলগ্ন চিলাপাতা আর বক্সা টাইগার রিজার্ভ। চিলাপাতা বুক চিরে রাস্তা চলে এলো জলদাপাড়াতে।
সাফারির জীপ বুক করে পরোটা ঘুগনি রসগোল্লা সহযোগে প্রাতরাশ করে বেরিয়ে পড়লাম বক্সার উদ্যেশে। বক্সার এন্ট্রিতে টিকিট কেটে ঢুকলাম বক্সার বুকে। অরণ্যের নিস্তব্ধতা ভেঙে গাড়ি এসে দাঁড়ালো রাজাভাতখাওয়া মিউজিয়ামে। এরপর জয়ন্তী। দূরের পাহাড়ের সারির হাতছানি। স্থানীয়রা বলে "ভুটান দেশের ভুটান পাহাড়". ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক আর দূরে জঙ্গলের ভেতরে কোনো অজানা মন্দিরের অনবরত বেজে চলা ঘন্টা। চালককে জিগ্যেস করতে বললো "দাদা ওটা একটা পোকা আসে।" গাড়ি এসে থামল জয়ন্তীর তীরে জয়ন্তী গ্রামে। ঠিক যেমন ছবিতে দেখা। একটি শীর্ণ নদী, সাদা বালির চর, সবুজে মোড়া, পাহাড় নীল আকাশ। এখানে একরাত থাকার এক রাশ আশা নিয়ে ফিরে এলাম। দুপুরে "কাতল" মাছের ঝোল ভাত খেয়ে
জলদাপাড়া ঢুকলাম পৌনে তিনটে নাগাদ। সাফারির গাড়ি নম্বর চারে চেপে বসলাম। গাইড ড্রাইভার ছাড়াও আমরা 6 জন। জঙ্গলের শুরুতেই স্বাগত জানালো একাকী এক বার্কিং ডিয়ার। দূরে ডেকে চলে যাচ্ছে জলদাপাড়ার খ্যাতনামা Malabar pied hornbill. চারিদিকে ময়ূরের চারণভূমি। সর্বমোট চারটে ভিউ পয়েন্ট। প্রথম ভিউ পয়েন্টেই দেখা মিললো greater one-horned rhinoceros বা great Indian rhinoceros এর। পিঠের উপর এক নীলকন্ঠ আর ফিঙেকে বহন করে সাভানা ঘাসের ভোজনে ব্যস্ত মহারাজ। Elephant Safari তে ব্যবহৃত কিছু হাতির দেখা মিললেও বুনো হাতির দেখা পাওয়া যায়নি। দ্বিতীয় ভিউ পয়েন্টে এসে দেখা পেলাম বুনো শুয়োর আর Red-watted Lapwing এর। হটাৎ খবর এক যে তৃতীয় ভিউ পয়েন্ট অর্থাৎ হলং বাংলোতে বাইসনেরা সদলবলে এসেছে। গিয়ে দেখি ঠিক তাই। পরিখার এপাশ থেকে বসে দেখা যাচ্ছে বাইসনের দল আর এক জোড়া ময়ূর। হলং বাংলোর মহিমাটা আজ পুরোটা বুঝতে পারলাম। চতুর্থ ভিউ পয়েন্টটা শুধুমাত্র সন্ধ্যের সাফারিতে দেখানো হয়। আসামের বিহু নাচ। 5 টে লোকনৃত্য পরিবেশিত হয়। জীবনের একটা স্মরনীয় সন্ধ্যে কাটিয়ে ফিরে এলাম কালজানি তে। পরের দিন সকালে গিয়েছিলাম কোচবিহার প্যালেস আর মদন মোহন মন্দির। ফিরতে ফিরতে অর্ধাঙ্গিনীর "কেমন ঘোরা হলো?" এর উত্তরে একটু তাই কবিসত্ত্বা জাগিয়ে লিখেই ফেললাম,
আমার ভ্রমনাক্রান্ত মন,
বিষন্ন হয়েছে যখন।
আমি ঘুরেছি আমি দেখেছি,
এক পাহাড়ের কোলে নদী
আর মেঘেদের মাঝে জীবন।
টুকিটাকি তথ্য :-
পুরো কোচবিহার শহর জুড়েই এক রাজকীয় ছোঁয়া। বেশির ভাগ প্রশাসনিক ভবনগুলিই পুরণোদিনে রাজবাড়ীর দপ্তর ছিল বলে মনে হয়। কাজ সেরে সন্ধ্যে বেলাই এসে একটা গাড়ি বুক করে নিলাম পরেই দিনের জন্য। কোচবিহার থেকে সোজা জলদাপাড়া ওখানে 3টের সাফারির টিকিট বুক করে বেরিয়ে যাবো বক্সা টাইগার রিজার্ভ। দরদাম করে ঘুর পথে একটু হেঁটে ফিরে এলাম কোচবিহার রাজবাড়ীর সামনে দিয়ে।
সকালে বেরিয়ে পড়লাম ডুয়ার্সের উদ্যেশে। কোচবিহারের রাস্তা ঘাট প্রশংসার দাবি রাখে। পিচকালো রাস্তার ওপর দিয়ে আমাদের swift dzire ছুটে চলেছে এক শৃঙ্গ্ গন্ডারের প্রাকৃতিক বাসস্থানের দিকে। জলদাপাড়া অভয়ারণ্য পূর্ব হিমালয়ের পাদদেশে 216 বর্গ কিলোমিটার অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে। এরই সংলগ্ন চিলাপাতা আর বক্সা টাইগার রিজার্ভ। চিলাপাতা বুক চিরে রাস্তা চলে এলো জলদাপাড়াতে।
সাফারির জীপ বুক করে পরোটা ঘুগনি রসগোল্লা সহযোগে প্রাতরাশ করে বেরিয়ে পড়লাম বক্সার উদ্যেশে। বক্সার এন্ট্রিতে টিকিট কেটে ঢুকলাম বক্সার বুকে। অরণ্যের নিস্তব্ধতা ভেঙে গাড়ি এসে দাঁড়ালো রাজাভাতখাওয়া মিউজিয়ামে। এরপর জয়ন্তী। দূরের পাহাড়ের সারির হাতছানি। স্থানীয়রা বলে "ভুটান দেশের ভুটান পাহাড়". ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক আর দূরে জঙ্গলের ভেতরে কোনো অজানা মন্দিরের অনবরত বেজে চলা ঘন্টা। চালককে জিগ্যেস করতে বললো "দাদা ওটা একটা পোকা আসে।" গাড়ি এসে থামল জয়ন্তীর তীরে জয়ন্তী গ্রামে। ঠিক যেমন ছবিতে দেখা। একটি শীর্ণ নদী, সাদা বালির চর, সবুজে মোড়া, পাহাড় নীল আকাশ। এখানে একরাত থাকার এক রাশ আশা নিয়ে ফিরে এলাম। দুপুরে "কাতল" মাছের ঝোল ভাত খেয়ে
জলদাপাড়া ঢুকলাম পৌনে তিনটে নাগাদ। সাফারির গাড়ি নম্বর চারে চেপে বসলাম। গাইড ড্রাইভার ছাড়াও আমরা 6 জন। জঙ্গলের শুরুতেই স্বাগত জানালো একাকী এক বার্কিং ডিয়ার। দূরে ডেকে চলে যাচ্ছে জলদাপাড়ার খ্যাতনামা Malabar pied hornbill. চারিদিকে ময়ূরের চারণভূমি। সর্বমোট চারটে ভিউ পয়েন্ট। প্রথম ভিউ পয়েন্টেই দেখা মিললো greater one-horned rhinoceros বা great Indian rhinoceros এর। পিঠের উপর এক নীলকন্ঠ আর ফিঙেকে বহন করে সাভানা ঘাসের ভোজনে ব্যস্ত মহারাজ। Elephant Safari তে ব্যবহৃত কিছু হাতির দেখা মিললেও বুনো হাতির দেখা পাওয়া যায়নি। দ্বিতীয় ভিউ পয়েন্টে এসে দেখা পেলাম বুনো শুয়োর আর Red-watted Lapwing এর। হটাৎ খবর এক যে তৃতীয় ভিউ পয়েন্ট অর্থাৎ হলং বাংলোতে বাইসনেরা সদলবলে এসেছে। গিয়ে দেখি ঠিক তাই। পরিখার এপাশ থেকে বসে দেখা যাচ্ছে বাইসনের দল আর এক জোড়া ময়ূর। হলং বাংলোর মহিমাটা আজ পুরোটা বুঝতে পারলাম। চতুর্থ ভিউ পয়েন্টটা শুধুমাত্র সন্ধ্যের সাফারিতে দেখানো হয়। আসামের বিহু নাচ। 5 টে লোকনৃত্য পরিবেশিত হয়। জীবনের একটা স্মরনীয় সন্ধ্যে কাটিয়ে ফিরে এলাম কালজানি তে। পরের দিন সকালে গিয়েছিলাম কোচবিহার প্যালেস আর মদন মোহন মন্দির। ফিরতে ফিরতে অর্ধাঙ্গিনীর "কেমন ঘোরা হলো?" এর উত্তরে একটু তাই কবিসত্ত্বা জাগিয়ে লিখেই ফেললাম,
আমার ভ্রমনাক্রান্ত মন,
বিষন্ন হয়েছে যখন।
আমি ঘুরেছি আমি দেখেছি,
এক পাহাড়ের কোলে নদী
আর মেঘেদের মাঝে জীবন।
টুকিটাকি তথ্য :-
1. Cooch Behar গেলে থাকতে পারেন জেলা পরিষদ গেস্ট হাউসে অর্থাৎ অথিতিনিবাসে। বুকিং লিঙ্ক http://www.coochbeharzillaparishad.in রুম- Rs. 450/- to Rs. 1500/- বুকিং অনলাইনে।
2. হলং বুকিং অনলাইন। কিন্তু বেশ কিছুদিন আগে থেকে করতে হয়। Wildlife valo lagle lifetime experience guaranteed. এছাড়া জলদাপাড়া ট্যুরিস্ট লজ রয়েছে। https://www.wbtdcl.com
3. বক্সা , জয়ন্তীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অসাধারণ। বক্সার entry fee Rs 100/- জন প্রতি। car 300/- (প্রতিদিন) Bike 20/-(শনি রবি বন্ধ) । Wild animal হাতি ছাড়া অন্য কিছু পাওয়া চাপের।
4 . জলদাপাড়াতে wild animal দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। *3টের সাফারি recommanded। Rs. 2400 per জীপ ছয়জন max। পরিচয়পত্রের xerox must।
5. phuentsholing(ভুটান) ও কোচবিহার থেকে ঘোরা যায় । পরিচয় পত্র রাখবেন।
6. কোচবিহার রাজবাড়ী 10 টা 5 টা খোলা। টিকিট Rs. 25/- আমাদের ড্রাইভার কোচবিহার আনিসুল 8016633871.
2. হলং বুকিং অনলাইন। কিন্তু বেশ কিছুদিন আগে থেকে করতে হয়। Wildlife valo lagle lifetime experience guaranteed. এছাড়া জলদাপাড়া ট্যুরিস্ট লজ রয়েছে। https://www.wbtdcl.com
3. বক্সা , জয়ন্তীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অসাধারণ। বক্সার entry fee Rs 100/- জন প্রতি। car 300/- (প্রতিদিন) Bike 20/-(শনি রবি বন্ধ) । Wild animal হাতি ছাড়া অন্য কিছু পাওয়া চাপের।
4 . জলদাপাড়াতে wild animal দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। *3টের সাফারি recommanded। Rs. 2400 per জীপ ছয়জন max। পরিচয়পত্রের xerox must।
5. phuentsholing(ভুটান) ও কোচবিহার থেকে ঘোরা যায় । পরিচয় পত্র রাখবেন।
6. কোচবিহার রাজবাড়ী 10 টা 5 টা খোলা। টিকিট Rs. 25/- আমাদের ড্রাইভার কোচবিহার আনিসুল 8016633871.
No comments