কালনা: কাল না আজই, কালনার মন্দিররাজি
বিষ্ণুপুরের পর মন্দির ও টেরাকোটার ঐতিহ্যবাহী বাংলার আর কোনো শহর থেকে থাকলে তা হল এই কালনা। এখানকার মন্দিরের স্থাপত্য বৈচিত্র্য যেন বিষ্ণুপুরকেও ছাড়িয়ে যায়।প্রায় হাজার বছরের পুরোনো এই কালনা, ১৫শ শতকের আমবোয়া জনপদ আজকের অম্বিকা কালনা। এই হাজার বছরে হয়েছে বিদেশী আগ্রাসন, সৈন্য ছাউনি, চৈতন্যদেবের আগমন, মন্দির নির্মাণ, সাধনা, ভজনা। সমৃদ্ধ হয়েছে ইতিহাস ও সংস্কৃতি।অবশ্য, আজ কালনা যে মন্দিরের জন্য বিখ্যাত, সেগুলির নির্মাণের শ্রেয় বর্ধমানের রাজা ও জমিদারদের। এগুলি ১৮শ ও ১৯শ শতকের গোড়ার দিকে তৈরী।
নবকৈলাস মন্দির বা ১০৮ শিব মন্দির, রাজা তেজচন্দ্রের দ্বারা নির্মিত ১৮০৯ সালে। এটি একটি চত্বর, মন্দিরগুলো দুটো বৃত্তের আকারে নির্মিত, বাইরের বৃত্তে ৭৪ ও ভিতরেরটিতে ৩৪টি মন্দির। ঠিক কেন্দ্রে একটি কুয়া। শিবলিঙ্গগুলি সাদা ও কালো পাথরের।
পরবর্তী উল্লেখ্য, রাজবাড়ী মন্দির কমপ্লেক্স। এটি তৈরী হয়েছিল, বর্গী আক্রমণে বেশ কিছু ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার পর, বর্ধমানেরই রাজা রানী আর তাদের বংশধরদের হাতে। প্রতাপেশ্বর মন্দির (দেউল আকৃতির), ২৫ রত্নের লালজিউ মন্দির ও কৃষ্ণচন্দ্র মন্দির, অদ্ভুতাকৃতি গিরি গোবর্ধন মন্দির, রাস মঞ্চ, দালানসম রূপেশ্বর মন্দির আর বেশকিছু আটচালার অবস্থান এখানে। অত্যন্ত পরিপুষ্ট এই স্থাপত্যগুলি টেরাকোটার শৈলী আর গঠনসুষমায়। ধন্যবাদ ASI কে, এর সংরক্ষণের জন্য।সিদ্ধেশ্বরী কালীবাড়ি, ছোট্ট একটি গলির মধ্যে, কিন্তু বেশ রঙচঙে এবং ভক্তিভাবে পরিপূর্ন। পাশেই অনন্ত বাসুদেব মন্দির।শুধু গঙ্গার পাড়ে জগন্নাথ জিউ মন্দির ত্রয়ের অবস্থা অতি জীর্ণ। অত্যন্ত সূক্ষ্ম টেরাকোটার কাজ বিশিষ্ট এই মন্দিরটি অযত্নে ধূসরিত। কেন এই দ্বিচারিতা, জানা নেই।
আসতে পারেন, কালনায়, কাল না আজই। কলকাতা থেকে আসার পথে ত্রিবেণীর কাছাকাছি ভ্রষ্টব্যগুলি দেখে কালনা ঘুরে আবার একই দিনে ফেরত চলে যাওয়া যায়।
ক্যামেরায় ধরে রাখা মুহূর্তগুলো
খুব সুন্দর লেখা।
ReplyDelete