মাত্র গত সপ্তাহেই ঘুরে এলাম বকখালি সমুদ্র সৈকত থেকে।
সপ্তাহান্তের ছুটি কাটানোর জন্য বেশ কাছাকাছি, ঝক্কিহীন, কম খরচের সুন্দর জায়গা বকখালি। 🏻♀
এই নিয়ে আমার অবশ্য ছ'বার হলো। আজ্ঞে হ্যাঁ,আমার একান্তই প্রিয় জায়গা। যদি সমুদ্র সৈকত এর কথা বলি, কোলকাতার কাছাকাছির মধ্যে।
এবার বলি, কিভাবে কি হলো.....
🏼🏼🏼🏼
শনিবার সকালে যাদবপুর স্টেশন থেকে ৭:৩০ এর ট্রেন ধরলাম। এই journey টা কিন্তু একটু hectic. আসলে ট্রেনে বসার জায়গা পাওয়া একটু মুশকিল লক্ষ্মীকান্তপুর স্টপেজের আগে।
তবে যদি আরাম করে যেতে চান, ধর্মতলা থেকে অহরহ বাস রয়েছে।
মোটামুটি আড়াই ঘন্টায় পৌঁছে যাবেন নামখানা স্টেশন এ।
সেখান থেকে আজকাল দেখলাম টোটো চালু হয়েছে। ৪০০/- নিচ্ছে একেবারে বকখালি পৌঁছে দিতে। আমিরা দুজন ছিলাম, পেয়ে গেছিলাম আরেক যুগল কে, তাই ভাড়া টা বেশ ভাগাভাগি হলো।
এছাড়া ভ্যান এ করে বাস স্ট্যান্ড এ এসে বাস ও ধরতে পারেন। তা বড়োজোর ১০/-
এখন তো হাতানিয়া-দোয়ানিয়া নদীর ওপর ব্রীজ টা খুলে গেছে, বেশ আরাম করেই পৌঁছে যাবেন বকখালি, কোনো অসুবিধেই নেই।
বকখালি তে এখন মোটামুটি অফ সিজন, তাই হোটেল লজ সবই available, তবে শনি-রোব্বার টা একটু expensive. কিন্তু available.
আমার পছন্দের জায়গা বলাকা লজ, সেখানেই উঠি। মোটামুটি ১৪০০-২৫০০/- এর মধ্যে ঘর ভাড়া পাওয়া যায় বলাকা লজে।
এছাড়া গোটা বকখালি জুড়ে ৪০০/- থেকে ৪০০০/- টাকা অব্ধি হটেল লজ কটেজ সবই আছে।
দুপুরের খাওয়ার টা আমরা রুমেই আনিয়ে নিয়েছিলাম। কাতলা আর পাব্দা ঝোল ভাত খেয়ে একটা ছোট্ট ঘুম হলো, ঘুম ভাঙতেই ক্লান্তি উধাও..
বিকেলে সমুদ্র সৈকতে যেতে বেশ ভালো লাগে। প্রথম গেলে প্রায় ৩কিমি পর্যন্ত সমদ্র দেখতে না পেয়ে হতাশ হবেন না। আমি বরং মনে করি এটাই এখানকার বিশেষত্ব। এতো খালি, ফাঁকা আর সূর্যে্্য র নরম আলো মাখা সমুদ্র সৈকত বুঝি আর দুটো নেই পশ্চিমবঙ্গ এ।
রোদ্দুর পরতে থাকলে এতো মনোরম হয় যেন মনেই পড়ে না শহরের অস্থির জীবন কে..
সন্ধ্যের পর সমুদ্রের পারে একদম ফ্রেশ মাছ পাওয়া যায়। যারা এই অব্ধি দীঘা পুরী তে মাছ খেয়ে খুব খারাপ অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, তাদের কিন্তু একেবারে নতুন আর আলাদা অভিজ্ঞতা হবে।
সস্তা এবং টাটকা মাছ সব।
১০/- থেকে শুরু মোটামুটি। এরা অবশ্য মাছের ঝাল বা ঝোলও তৈরী করে দেন, মাত্র ১০০-১৫০/- টাকার বিনিময়ে।
রাতের খাওয়ারের জন্য বেশ তৈরী করিয়ে নিতে পারেন ১৫-২০মিনিট দাঁড়িয়ে থেকে।
পরদিন সকালে সূর্যোদয় টা মিস করবেন না। মোটামুটি এই সময় ৫:৩০-৬টার মধ্যেই হয়।
তারপর না হয় সমুদ্রের পারে ব্রেকফাস্ট টা সেরে নেবেন..
আমরা দুপুরের লাঞ্চ টা হোটেলেই সেরে রওনা দেবো ঠিক করে ছিলাম।তাই জন্য ১১টায় চেক আউট করে হোটেলের রেস্টুরেন্ট এ ঢুকলাম। মাছ ভাত সেরে বেরিয়ে পরলাম।
তবে এবার একটা মজার ব্যাপার হলো।
আমরা বাস স্ট্যান্ড এ যাব ভাবছি স্টেশন যাওয়ার জন্য, একটি উবের/ওলা হবে রাজি হয়ে যায় ১২০০/- টাকায়।
এখানে বলে রাখি, যদি কেউ এই extra amount টা খরচ করে একটু আরামে কোলকাতা ফিরবেন মনে করেন, তবে চেষ্টা করে দেখতে পারেন। আজকাল অনেকেই ওলা/উবের আউট ষ্টেশন নিয়ে আসেন এদিকে। ফেরার সময় এরকম ডিল করে ফিরতেই পারেন কিন্তু। আমরা দুই ঘন্টায় পৌঁছে ছিলাম বাড়ি। একটা ভালো লাগা নিয়ে। একটা ভালো অনুভূতি নিয়ে লাল কাঁকড়ার পাড় থেকে...
সাথে সঞ্চিত হয়েছে অনেক স্মৃতি, আমাদের সারাজীবনের...
No comments