রোডোডেন্ড্রনের মাঝেঃ ভার্সে ট্রেকিং
চট করে একবার হিলে ভার্সে ঘুরে আসুন। দারুণ সুন্দর একটা ট্রেকিং আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। না, না, ঘাবড়াবেন না একদম। এই ট্রেক করতে গিয়ে আপনাকে অনেক কিছু নিয়েও যেতে হবে না, ওষুধও খেতে হবে না। তবু যখন ফিরে আসবেন, দেখবেন এর স্মৃতি লেগে থাকবে চোখে মুখে। চোখ বুজলেই দেখতে পাবেন ঐ বনবীথির প্রতিটি বাঁক, অনুভব করতে পারবেন পায়ের তলায় বিছিয়ে থাকা পাতার মখমল, দেখতে পাবেন হরেক রকম রঙের গুরাসের ক্যানভাস। ঠিক ধরেছেন, গুরাস হল আমাদের পরিচিত সেই পাহাড়ি ফুল, রোডোডেন্ড্রন। আর যে রাস্তাটির কথা বললাম, সেটি হল ভার্সে রোডোডেন্ড্রন স্যানকচুয়ারির পথ।
হিলে থেকে আপনাকে যেতে হবে ভার্সে। ওখানে যে চেক পোস্ট আছে, সেখান থেকে আপনাকে হাঁটতে হবে প্রায় ৪ কিমি। এটাই ট্রেকিং। সময় লাগবে ধরুন ঘন্টা দুয়েক। তবে আপনার ফোটোগ্রাফির সখ থাকলে সময় অনেক বেশি লাগবে। কারণ প্রতিটি বাঁকেই আপনি ছবি না তুলে আসতে পারবেন না।
কি ভাবে যাবেনঃ
নিউ জলপাইগুড়ি বা শিলিগুড়ি থেকে গাড়ি নিয়ে অথবা বাসে যেতে হবে জোরথাং। শেয়ার গাড়ি হলে জোরথাং এ গিয়ে অন্য গাড়ি নিতে হবে। জোরথাং থেকে আপনাকে যেতে হবে ওখরে তে। ওখরে থেকে হিলে আর ভার্সে যেতে হয়।
এবারে বলি কি, কবে, কোথায়ঃ
১. ভার্সে যেতে হলে আপনাকে হিলে হয়ে যেতে হবে। আবার হিলে তে আপনাকে যেতে হবে ওখরে হয়ে। তাই ওখরে তে একরাত থাকতেই হবে। ওখরে খুব সুন্দর জায়গা। ছোট্ট একটা জনপদ, পাহাড়ের ঢালে ঢালে কয়েকটা ঘরবাড়ি। আছে একটা ছোটো স্কুল। ওখরে থেকে যে দৃশ্য আপনি দেখতে পাবেন, তা অসাধারণ। ওখান থেকে আপনি অন্যান্য কয়েকটা জায়গাও দেখে আসতে পারবেন। ওখরের উচ্চতা প্রায় ৯০০০ ফিট, ভার্সের উচ্চতা ১০০০ ফিট বেশি।
২. ওখরে থেকে হিলের দূরত্ব ৯ কিমি। ওখানে এম এন শেরপা আপনার জন্য সব ব্যবস্থা করে দেবে। গাড়ি নিয়ে সকাল সকাল চলে আসুন হিলে তে। চেকপোস্টে পারমিট করে নিয়ে ঢুকে যান ভার্সে রোডোডেন্ড্রন স্যানকচুয়ারিতে। দু ভাবে আপনি করতে পারেন। এক, গাড়ি বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে ট্রেকিং করে গিয়ে ফিরে আসতে পারেন। অথবা, সেই রাতে আপনি ভার্সের ভেতরেই থাকতে পারেন। সেই মতো গাড়ি এসেও যাবে পরদিন।
৩. হিলে চেকপোস্ট থেকে আপনার ট্রেকিং শুরু। এ এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। কেমন লাগবে, কি দেখবেন, কেমন অনুভব করবেন, সে সব ওখানে গিয়েই হবে ক্ষন। শুধু বলি, এ যদি আপনার জীবনের প্রথম ট্রেকিং হয়, তাহলে ওখান থেকে ঘুরে এসে খুব তাড়াতাড়ি আপনি দ্বিতীয়বার আবার ট্রেকিং এ যাওয়ার পরিকল্পনা করতে শুরু করবেন। আপনাকে একেবারেই ট্রেকিং এ পাবে। আর যদি বলেন গুরাসের কথা, সে আপনি পাবেন সব রকমের, আর সব রঙের। এছাড়া? আছে, আছে। এই ৪ কিমি অনবদ্য হাঁটাপথ আরোও অনবদ্য হবে হরেক রকম পাখির উপস্থিতিতে। সে লম্বা তালিকা। আর গুরাস বা রোডোডেন্ড্রন ছাড়াও আছে ম্যাগনোলিয়া, হেমলক, সিলভার ফারের দল। আর দেখতে পাবেন দূরে বিশাল বিস্তৃত কাঞ্চনজঙ্ঘা।
৪. ভার্সে আসলে সিঙ্গালিলা রিজের মধ্যে অবস্থিত, যা কি না ভারত আর নেপালের প্রাকৃতিক সীমারেখা তৈরি করেছে। ট্রেকিং এর সময় আপনি ফুটেধারা হয়ে, সোরেং আর হি বার্মোইক পাবেন। আরও একটু বেশি চাইলে, এই জায়গা থেকে আপনি সিঙ্গালিলা পাসে পৌঁছে যাবেন, যেখান থেকে আপনি ফালুটেও চলে যেতে পারবেন।
৫. ভার্সেতে যেখানে পৌঁছবেন, সেখানে আছে থাকার জন্য অনবদ্য এক রিসর্ট। এর নাম গুরাস কুঞ্জ। এখানে এক রাত্রি থাকার পরিকল্পনা খারাপ হবে না। বুকিং এর নাম্বার পরে দিয়ে দিচ্ছি।
৬. ভার্সে থেকে মিনিট দশেকের হাঁটা পথে আপনি আসবেন ভার্সে টপে। এখান থেকে আদিগন্ত বিস্তৃত এক ক্যানভাসে আপনি দেখতে পাবেন আমাদের কাঞ্চনজঙ্ঘাকে। একেবারে ১৮০ ডিগ্রি উন্মুক্ত। পশ্চিমে সূর্যাস্ত আপনাকে পরিশুদ্ধ করবে। এই পশ্চিমেই আছে বিখ্যাত সন্দাকফু ট্রেকিং রুট।
৭. ওখরে থেকে আর কিছু দারুণ জায়গায় যেতে পারবেন। জোরথাং ব্রিজ হয়ে রঙ্গিত নদী পেরিয়ে বাঁ দিকে গেলে ওখরে। ডান দিকে এ রাস্তাটি গেছে, সেটি আসছে পেলিং এ।
৮. আরো একটু গেলে দেখবেন গাড়ির সংখ্যা কমে গেছে। আর আপনি নিজেকে এক অসাধারণ প্রাকৃতিক পরিবেশের মাঝে আবিষ্কার করবেন। শুধু সবুজ আর সবুজ। আর পাহাড়, আর মেঘ। এখান থেকে যান সোরেং এর দিকে।
৯. সোরেং থেকে আরো এগোলে দেখবেন রাস্তা শেষ। এটাই হল ডোডক বা দোদক। এখান থেকে আপনি ভার্সে দেখতে পাবেন। ঘন্টা দুয়েকের মধ্যে এখান থেকে আপনি পৌঁছে যাবেন হিলে তে। অপূর্ব সৌন্দর্য্য এই রাস্তার।
১০. একটু দূর হলেও, ওখরে থেকে গাড়ি নিয়ে দু'টি জায়গা দেখে আসতে পারেন। একটি সিয়াভঞ্জন। আর একটি হি পাতাল। খুব সুন্দর এই দুটি জায়গা।
এই হলো মোটামুটি ওখরে-হিলে-ভার্সে ঘোরার ছক। আসলে হিমালয়ের কোলে সব জায়গাই সমানভাবে সুন্দর। কি করে বলি বলুন তো, যে এই পাহাড়টা দেখতে ভালো, আর ঐ নদীটা সেরকম নয়? কি করে ঠিক করবো, এই পাহাড়ের ফুলগুলো বেশি ভালো, আর ওখানে পাখির ডাক ভালো নয়? আমি তো বিহ্বল হয়ে, মন প্রাণ দিয়ে প্রতিটি মুহুর্ত, প্রতিটি ক্ষন দেখতেই থাকি, শুষে নিতে থাকি এই সৌন্দর্য্য। আর মন ভরে যায় অনাবিল আনন্দে।
গুরাস কুঞ্জঃ 9800398309/9593882002 Whats অ্যাপ: 9800398309 ইমেইল: info.okhrey@gmail.com
চট করে একবার হিলে ভার্সে ঘুরে আসুন। দারুণ সুন্দর একটা ট্রেকিং আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। না, না, ঘাবড়াবেন না একদম। এই ট্রেক করতে গিয়ে আপনাকে অনেক কিছু নিয়েও যেতে হবে না, ওষুধও খেতে হবে না। তবু যখন ফিরে আসবেন, দেখবেন এর স্মৃতি লেগে থাকবে চোখে মুখে। চোখ বুজলেই দেখতে পাবেন ঐ বনবীথির প্রতিটি বাঁক, অনুভব করতে পারবেন পায়ের তলায় বিছিয়ে থাকা পাতার মখমল, দেখতে পাবেন হরেক রকম রঙের গুরাসের ক্যানভাস। ঠিক ধরেছেন, গুরাস হল আমাদের পরিচিত সেই পাহাড়ি ফুল, রোডোডেন্ড্রন। আর যে রাস্তাটির কথা বললাম, সেটি হল ভার্সে রোডোডেন্ড্রন স্যানকচুয়ারির পথ।
হিলে থেকে আপনাকে যেতে হবে ভার্সে। ওখানে যে চেক পোস্ট আছে, সেখান থেকে আপনাকে হাঁটতে হবে প্রায় ৪ কিমি। এটাই ট্রেকিং। সময় লাগবে ধরুন ঘন্টা দুয়েক। তবে আপনার ফোটোগ্রাফির সখ থাকলে সময় অনেক বেশি লাগবে। কারণ প্রতিটি বাঁকেই আপনি ছবি না তুলে আসতে পারবেন না।
কি ভাবে যাবেনঃ
নিউ জলপাইগুড়ি বা শিলিগুড়ি থেকে গাড়ি নিয়ে অথবা বাসে যেতে হবে জোরথাং। শেয়ার গাড়ি হলে জোরথাং এ গিয়ে অন্য গাড়ি নিতে হবে। জোরথাং থেকে আপনাকে যেতে হবে ওখরে তে। ওখরে থেকে হিলে আর ভার্সে যেতে হয়।
এবারে বলি কি, কবে, কোথায়ঃ
১. ভার্সে যেতে হলে আপনাকে হিলে হয়ে যেতে হবে। আবার হিলে তে আপনাকে যেতে হবে ওখরে হয়ে। তাই ওখরে তে একরাত থাকতেই হবে। ওখরে খুব সুন্দর জায়গা। ছোট্ট একটা জনপদ, পাহাড়ের ঢালে ঢালে কয়েকটা ঘরবাড়ি। আছে একটা ছোটো স্কুল। ওখরে থেকে যে দৃশ্য আপনি দেখতে পাবেন, তা অসাধারণ। ওখান থেকে আপনি অন্যান্য কয়েকটা জায়গাও দেখে আসতে পারবেন। ওখরের উচ্চতা প্রায় ৯০০০ ফিট, ভার্সের উচ্চতা ১০০০ ফিট বেশি।
২. ওখরে থেকে হিলের দূরত্ব ৯ কিমি। ওখানে এম এন শেরপা আপনার জন্য সব ব্যবস্থা করে দেবে। গাড়ি নিয়ে সকাল সকাল চলে আসুন হিলে তে। চেকপোস্টে পারমিট করে নিয়ে ঢুকে যান ভার্সে রোডোডেন্ড্রন স্যানকচুয়ারিতে। দু ভাবে আপনি করতে পারেন। এক, গাড়ি বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে ট্রেকিং করে গিয়ে ফিরে আসতে পারেন। অথবা, সেই রাতে আপনি ভার্সের ভেতরেই থাকতে পারেন। সেই মতো গাড়ি এসেও যাবে পরদিন।
৩. হিলে চেকপোস্ট থেকে আপনার ট্রেকিং শুরু। এ এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। কেমন লাগবে, কি দেখবেন, কেমন অনুভব করবেন, সে সব ওখানে গিয়েই হবে ক্ষন। শুধু বলি, এ যদি আপনার জীবনের প্রথম ট্রেকিং হয়, তাহলে ওখান থেকে ঘুরে এসে খুব তাড়াতাড়ি আপনি দ্বিতীয়বার আবার ট্রেকিং এ যাওয়ার পরিকল্পনা করতে শুরু করবেন। আপনাকে একেবারেই ট্রেকিং এ পাবে। আর যদি বলেন গুরাসের কথা, সে আপনি পাবেন সব রকমের, আর সব রঙের। এছাড়া? আছে, আছে। এই ৪ কিমি অনবদ্য হাঁটাপথ আরোও অনবদ্য হবে হরেক রকম পাখির উপস্থিতিতে। সে লম্বা তালিকা। আর গুরাস বা রোডোডেন্ড্রন ছাড়াও আছে ম্যাগনোলিয়া, হেমলক, সিলভার ফারের দল। আর দেখতে পাবেন দূরে বিশাল বিস্তৃত কাঞ্চনজঙ্ঘা।
৪. ভার্সে আসলে সিঙ্গালিলা রিজের মধ্যে অবস্থিত, যা কি না ভারত আর নেপালের প্রাকৃতিক সীমারেখা তৈরি করেছে। ট্রেকিং এর সময় আপনি ফুটেধারা হয়ে, সোরেং আর হি বার্মোইক পাবেন। আরও একটু বেশি চাইলে, এই জায়গা থেকে আপনি সিঙ্গালিলা পাসে পৌঁছে যাবেন, যেখান থেকে আপনি ফালুটেও চলে যেতে পারবেন।
৫. ভার্সেতে যেখানে পৌঁছবেন, সেখানে আছে থাকার জন্য অনবদ্য এক রিসর্ট। এর নাম গুরাস কুঞ্জ। এখানে এক রাত্রি থাকার পরিকল্পনা খারাপ হবে না। বুকিং এর নাম্বার পরে দিয়ে দিচ্ছি।
৬. ভার্সে থেকে মিনিট দশেকের হাঁটা পথে আপনি আসবেন ভার্সে টপে। এখান থেকে আদিগন্ত বিস্তৃত এক ক্যানভাসে আপনি দেখতে পাবেন আমাদের কাঞ্চনজঙ্ঘাকে। একেবারে ১৮০ ডিগ্রি উন্মুক্ত। পশ্চিমে সূর্যাস্ত আপনাকে পরিশুদ্ধ করবে। এই পশ্চিমেই আছে বিখ্যাত সন্দাকফু ট্রেকিং রুট।
৭. ওখরে থেকে আর কিছু দারুণ জায়গায় যেতে পারবেন। জোরথাং ব্রিজ হয়ে রঙ্গিত নদী পেরিয়ে বাঁ দিকে গেলে ওখরে। ডান দিকে এ রাস্তাটি গেছে, সেটি আসছে পেলিং এ।
৮. আরো একটু গেলে দেখবেন গাড়ির সংখ্যা কমে গেছে। আর আপনি নিজেকে এক অসাধারণ প্রাকৃতিক পরিবেশের মাঝে আবিষ্কার করবেন। শুধু সবুজ আর সবুজ। আর পাহাড়, আর মেঘ। এখান থেকে যান সোরেং এর দিকে।
৯. সোরেং থেকে আরো এগোলে দেখবেন রাস্তা শেষ। এটাই হল ডোডক বা দোদক। এখান থেকে আপনি ভার্সে দেখতে পাবেন। ঘন্টা দুয়েকের মধ্যে এখান থেকে আপনি পৌঁছে যাবেন হিলে তে। অপূর্ব সৌন্দর্য্য এই রাস্তার।
১০. একটু দূর হলেও, ওখরে থেকে গাড়ি নিয়ে দু'টি জায়গা দেখে আসতে পারেন। একটি সিয়াভঞ্জন। আর একটি হি পাতাল। খুব সুন্দর এই দুটি জায়গা।
এই হলো মোটামুটি ওখরে-হিলে-ভার্সে ঘোরার ছক। আসলে হিমালয়ের কোলে সব জায়গাই সমানভাবে সুন্দর। কি করে বলি বলুন তো, যে এই পাহাড়টা দেখতে ভালো, আর ঐ নদীটা সেরকম নয়? কি করে ঠিক করবো, এই পাহাড়ের ফুলগুলো বেশি ভালো, আর ওখানে পাখির ডাক ভালো নয়? আমি তো বিহ্বল হয়ে, মন প্রাণ দিয়ে প্রতিটি মুহুর্ত, প্রতিটি ক্ষন দেখতেই থাকি, শুষে নিতে থাকি এই সৌন্দর্য্য। আর মন ভরে যায় অনাবিল আনন্দে।
গুরাস কুঞ্জঃ 9800398309/9593882002 Whats অ্যাপ: 9800398309 ইমেইল: info.okhrey@gmail.com
No comments